আধ্যাত্মিকতায় নারীকে ভোগ: অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে একটি মতবাদে তো মৃর্তুর পরবর্তী জীবনে তাঁদের স্বর্গে গেলে অনেক নারী ভোগের কথা বলা হয়, তেমন আমাদের ধর্মেও তো অপ্সরা, উর্বশী আছে? তারা কী ইন্দ্রের ভোগের জন্য? এই জিজ্ঞাসা আমাদের মনে কখনো উঠেনি এটা অসম্ভব। তাই আসুন আজ এই জিজ্ঞাসার মীমাংসা আমার ভাষায় করার চেষ্টা করা যাক।
সতর্কতাঃ এই পোষ্টের সাথে Sohobanglait পোর্টাল কোনোভাবেই সম্পর্কযুক্ত নয়। এটি একান্তই পোষ্টদাতার মতামত।
![আধ্যাত্মিকতায় নারীকে ভোগ করা বলতে কী বোঝায়? - Educational Purposes 2 Thakurmar jhuli](https://sohobanglait.com/wp-content/uploads/2024/01/Thakurmar-jhuli.webp)
ঠাকুর মার ঝুলি তো আমরা অনেকেই দেখেছি। ঠাকুর মার ঝুলি গল্পে তো অনেক কিছু দেখানো হয়ে থাকে যা অযৌক্তিক। গল্পটির গভীর ভাবার্থ না নিয়ে যদি আমরা গল্পটিতে এমন কেন দেখালো, এমন কি হয়? এইসব জিজ্ঞাসা তুলি তাহলে আমাদের বোকা ছাড়া কি বলা হবে? তেমনই পুরানের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য, পুরানের ভাবার্থ নিতে হবে। তাহলে আমরা তার গভীর আধ্যাত্মিক মর্ম সহজে বুঝতে পারবো। বলতে গেলে পুরানের ভিতরের গল্পসমূহ হোলো আধ্যাত্মিক code, যেইগুলো আমাদের de-codeing করতে হবে। সবই এখানে প্রতিকী হিসাবে ব্যাবহৃত হয়েছে।
আধ্যাত্মিকতায় নারীকে ভোগ করা বলতে কী বোঝায়
যেমন – অপ্সরা হোলো আমাদের ভোগের প্রতি আকর্ষণীয় বৃত্তি যা আমাদের ভোগে ডুবিয়ে রাখে। আর উর্বশী হোলো আরো আকর্ষণীয়া, অর্থাৎ আরো বড়ো মোহ। আর ইন্দ্র (রাজা) হোলো মন। যেহেতু মনের মাধ্যমে আমরা সংকল্প বিকল্প নেই তাই একে দেবতা বলা হয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু মোহ, লোভ ইত্যাদিতে ডুবে আছে, এটাই মায়ার খেলা।
অর্থাৎ তারা আধ্যাত্মিক লেভেলে ১ এ রয়েছে, তাঁদের যদি আগেই কলেজের পড়া দেওয়া হয় তারা কোনোদিন ধারণ করতে পারবে? সিংহীর দুধ সোনার বাটিতেই কিন্তু থাকে। যারা ১ এ রয়েছে তাঁদের স্বর্গের লোভ এবং নরকের ভীতি দেখিয়ে যদি ভালো কাজ করানো যায়, ভালো কাজের স্বাদ পায় তাতে দোষ কি? ভালো কাজ করতে করতে তাঁদের আধার উন্নত হবে, তখন আবার তাঁদের জন্য আলাদা জ্ঞান রয়েছে।
যীশুক্রিস্ট (ঈশা নবী) স্বর্গের কথা বলে অনেককে উদারতার পথে এনেছিলেন, তারপরে যখন তাকে স্বর্গের ব্যাপারে তার ভক্তরা জিজ্ঞাসা করে তখন তিনি বলেছিলেনঃ এখন তোমাদের ভিতরেই তো স্বর্গ প্রতিষ্ঠিত।
![আধ্যাত্মিকতায় নারীকে ভোগ করা বলতে কী বোঝায়? - Educational Purposes 3 Apsara](https://sohobanglait.com/wp-content/uploads/2024/01/Apsara.webp)
চৈতন্যদেব বলতেনঃ যুবতী মেয়ের কোল, মাগুর মাছের ঝোল, বলো হরিবোল। “এখানে যুবতী মেয়ে মানে ধরিত্রী মাতা, তার কোলে হরি ভাবে বিভোর হয়ে গড়াগড়ি খাওয়া, আর ঝোল মানে আনন্দশ্রুকে বুঝিয়েছেন। সেটি পরে তার ভক্তরা জানতে পারে। নাহলে যে ধর্ম ত্যাগের কথা বলে, সে হটাৎ ভোগের কথা কেন বলবে? আশা করি আপনারা আপনাদের উত্তর যৈক্তিক ভাবে পেয়েছেন।
লেখকঃ Shri Argha Banerjee Link.
বাড়িঃ ভারত
এই লেখাগুলি পড়তে পারেন
- দই এর ইতিহাস: নবদ্বীপের লালদই [আবিষ্কর্তা ও ইতিহাস]
-
হিন্দু সংস্কৃতির উপর মাস্টারপিস গান প্রকাশ – সবচেয়ে জনপ্রিয় বিদেশি গায়ক | জেনে নিন তাদের সম্মন্ধে
-
দেবী দুর্গার ইতিহাস এবং দূর্গা পূজার অজানা রহস্য, যা আপনাকেউ ভাবতে বাধ্য করবে
TAG: অপ্সরা সুন্দরী,অপ্সরা নাম,অপ্সরা সম্পর্কে কিছু অজানা কথা,ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী,উর্বশী দেবী।
বাহ্ বেশ চালিয়ে যাও।
শুধু এটুকু বলে শেষ করে দিলে যেমন কেবলই প্রণোদনা হয়, সত্য প্রতিষ্ঠা হয় না, সত্যের উপরে রূপক বা decoding যোগ্য একটা মর্ম উদ্ধারের কাজ বাকি থাকে, নবাগতকে এগিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এই কৌশল এক প্রকার সুপ্রিমনেস কমপ্লেক্স সৃষ্টি করে।
কোনো যথার্থ গুরুর কাছ থেকে এই বিষয়টা এলে এটা তার সিদ্ধান্ত। কিন্তু যে শিষ্য আধ্যাত্মিকতার প্রাথমিক পর্যায় পর করলো না, decoding কৌশল যার কাছে উন্মোচিত হলো না, তার তো সকল সম্ভাবনাই রূপক আর পৌরাণিক গল্প আর আচারের ছকেই আটকে গেলো।
যেমনটা বহু সংখ্যক ধর্মমুখী হিন্দু মুসলিম বা অন্যান্য জনগোষ্ঠীর হয়েছে।
যা সত্য তা পরিষ্কার সরাসরি বলা উচিত। এটা বরং শ্রোতাকে আরো দ্রুততর সময়ে বিষয়বস্তু অনুধাবনে যোগ্য করে তোলে।
যেমন, ছোটো বেলাতেই বাচ্চাদের ঠাকুরমার ঝুলি বা children fairy tale না শেখানোই উচিৎ।বা শেখালেও এইটা সবার আগে বলা উচিত এসব পূর্ণ কল্পনাআশ্রয়ী , বানোয়াট, সত্যের সঙ্গে সংযোগ হতে পারে বা কাকতালীয়।
এর সুবিধে এই যে তাতে জীবন যেটুকু এগোয় তাতে অন্তত ফ্যান্টাসি প্রতিষ্টিত হয় না।
মোহ বা মায়ার জন্মই কল্পনার আশ্রয়ে। তাকে বাচ্চা বয়স থেকেই খোলামেলা ত্যাগের অভ্যাস করানো উচিৎ।
তোমার সত্য প্রকাশের লেখনি শক্তির বিকাশ ঘটুক এই প্রত্যাশায়।
অর্ঘ্য বেনার্জীর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।