বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। এ কারণে সেখানকার জনপদ আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাখাইনে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।
Myanmar Civil War 2024
মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে বলে কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় গণমাধ্যমে খবর আসছে। এ অবস্থায় সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা আতঙ্কিত। তবে রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা সজাগ রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ
![Myanmar Civil War 2024: রোহিঙ্গা সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে, কি বলছে সরকার - জানুন বিস্তারিত 2 Myanmar Civil War 2024](https://sohobanglait.com/wp-content/uploads/2024/02/Picsart_24-02-01_13-20-34-881-1024x600.webp)
মিয়ানমার সীমান্তে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবং দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে কয়েক দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে। এ অবস্থায় কোনো রোহিঙ্গা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক রয়েছে।
সীমান্ত পর্যবেক্ষন করছে জাতিসংঘ
মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় জাতিসংঘ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসছে কি না তাও পর্যবেক্ষণ করছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের মতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর এখনই উপযুক্ত সময় নয়।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস বলেছেন, রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন খুবই কঠিন। মিয়ানমার সীমান্তে যুদ্ধ চলছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার উপযুক্ত সময় এখন নয়। তবে আমরা আশা করি রোহিঙ্গারা নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরতে পারবে।
কি হবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার
প্রায় 1.1 মিলিয়ন রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। 2017 সালে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এরপর থেকে অনেক উদ্যোগ নেয়া হলেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এছাড়া প্রতিবছর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ৩৫ হাজার শিশুর জন্ম হয়। দিন দিন রোহিঙ্গা জনসংখ্যা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিলেও প্রক্রিয়াটি খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে সংঘাতের কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কি বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (Myanmar Civil War 2024)
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি চলছে। সেখানকার পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না। 2017 সালে যখন রোহিঙ্গারা আসতে শুরু করে, তখনও পরিস্থিতি ভালো ছিল না। তবে আমরা আশা করছি পরিস্থিতির উন্নতি হবে। মিয়ানমারের পরিস্থিতির সমাধান হলেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে।