অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার – ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা

Contents
অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকারস্ব-শিক্ষাঃসময় ব্যবস্থাপনাঃযৌক্তিক বিশ্লেষণঃদ্রুত চিন্তাঃসমস্যা সমাধানঃসমালোচনা গ্রহণঃঅভিযোজনযোগ্যতাঃউচ্চ-ঝুঁকি সহনশীলতাঃআর্থিক সাক্ষরতাঃউপসংহারঃ
অনলাইনে কাজ করা বা ফ্রিল্যান্সিং করা অনেক মজার মনে হয়। আপনি কিছু না জেনে বা না করে ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন না। সমস্ত ফ্রিল্যান্সারদের অনলাইনে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট দক্ষতা থাকা উচিত। সমস্ত ফ্রিল্যান্সারদের এই পোস্টে উল্লিখিত গুণাবলীর অধিকারী হওয়া উচিত।

অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার
যেকোন ফ্রিল্যান্সারের তাদের মূল কাজ ছাড়াও অন্যান্য অনেক দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই আজকের এই পোষ্টে অনলাইনে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্পর্কে।

অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার
অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার
স্ব-শিক্ষাঃ
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য, নিজের শেখার আবেগ এবং ইচ্ছা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন চাকুরীজীবীকে প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কোর্স করানো হয় ও দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করা হয়, কিন্তু একজন ফ্রিল্যান্সারকে নিজের মোটিভেশন ব্যবহার করে নতুন জিনিস শিখে নিজের দক্ষতা বাড়াতে হয়।

এটি একটি বিদ্যমান দক্ষতা বাড়ানো হোক বা আপনার কাজের উন্নতির জন্য নতুন দক্ষতা শেখা হোক, আপনাকে নতুন কিছু শিখতে নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। একজন ফ্রিল্যান্সার বই পড়ে, ভিডিও দেখে, কোর্স নেওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেকে একটি বিষয়ে শিক্ষিত করতে পারেন। এখনি জেনে নিন UPS কেন ব্যবহার করা হয় এবং UPS এর উপকারিতা কি।

সময় ব্যবস্থাপনাঃ
একজন ফ্রিল্যান্সার এর সময় ধরে কাজ করার প্রয়োজন না হলেও জীবনে ভারসাম্য রাখতে অবশ্যই প্রয়োজন সময় ব্যবস্থাপনার শেখার। হেলায়ফেলায় সময় নষ্ট করে কাজকে পিছিয়ে নেওয়ার বাজে অভ্যাস অনেক ফ্রিল্যান্সারের রয়েছে যা এড়িয়ে চলতে পারলে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটুকুই এগিয়ে থাকা যায়। তাই একজন ফ্রিল্যান্সারের উচিত সময় ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দেওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট না করে সময়ের যথাযথ ব্যবহার করা। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি যত বেশি শৃঙ্খলাবদ্ধ হবেন, আপনার কাজের মানের সাথে সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত তত সহজ হবে।

আরও পড়ুনঃ Picoworkers দিয়ে অনলাইন ইনকাম – Online Income BD
যৌক্তিক বিশ্লেষণঃ
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার কাজের বর্ণনা ক্লায়েন্টকে জানানোর প্রয়োজন হতে পারে। কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে ক্লায়েন্ট জানতে চাইলে সেক্ষেত্রে আপনাকে ঠিকঠাকভাবে এসব বিষয় বুঝিয়ে দিতে হবে। আবার আপনার পেমেন্ট বাকি থাকলে সে সম্পর্কে ঠিকভাবে ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে তা আদায় করে নিতে হবে। আপনি যদি আপনার ক্লায়েন্টের সাথে ঠিকভাবে কথা বলে নিজের পাওনা আদায় করতে না পারেন বা নিজের কোনো কাজের কারণ বুঝিয়ে দিতে না পারেন তবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পিছিয়ে পড়বেন। যৌক্তিক বিশ্লেষণে যদি আপনি দক্ষ হন, তাহলে আপনার ক্লায়েন্টের সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাও পাবেন।

দ্রুত চিন্তাঃ
যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও দ্রুত চিন্তা, এই দুইটি বিষয় একইসাথে কাজ করে। শুধুমাত্র ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলা নয়, নিজের কাজের প্রোডাক্টিভ ফ্লো চালু রাখতে অবশ্যই দ্রুত চিন্তা করার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। আপনি যত দ্রুত চিন্তা করতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি রিসার্চ করে কোনো বিষয়ের সমাধান করতে পারবেন।

এছাড়াও মনে রাখবেন কোনো কাজ দ্রুত করার জন্য আপনি অতিরিক্ত পেমেন্ট চার্জ করতে পারবেন। এতে ক্লায়েন্টের সময় বাঁচবে, আপনিও সময়ের পাশাপাশি অধিক অর্থ আয় করতে পারবেন। আপনার কাজ দ্রুত হলে গিগ বাদ দিয়ে ঘন্টা-প্রতি কাজ করতে পারবেন। আপনি কি জানেন বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কোন কাজের চাহিদা বেশি।

আরও পড়ুনঃ Meta ফেসবুকে আনলো নতুন আয়ের উৎস, জেনে নিন ফেসবুকে কিভাবে আয় করবেন!
সমস্যা সমাধানঃ
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার কাজ হলো ক্লায়েন্টের সমস্যা বুঝে তার সমাধান খুঁজে বের করা। ক্লায়েন্ট যদি সমস্যার কথা ইতিমধ্যে জানে তাহলে তো আপনার জন্য কাজ সহজ হয়ে গেলো, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উলটো ব্যাপারটি হয়ে থাকে।

অধিকাংশ সময়ে আপনাকে সমস্যা কি তা খুঁজে বের করার পাশাপাশি এর সমাধানও খুঁজে বের করতে হবে। আপনার জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা থাকলে অন্যান্য ফ্রিল্যান্সার থেকে এই দিক দিয়ে এগিয়ে থাকতে পারবেন।

সমালোচনা গ্রহণঃ
স্বশিক্ষা দারুণ একটি সুযোগ নতুন কিছু শেখার, তবে সমালোচনা থেকেও কিন্তু অনেক ভালো শিক্ষা পাওয়া যায় যা অধিকাংশ সময় ক্লায়েন্ট থেকে আসে। আপনি যদি যথেষ্ট গবেষণা করতে ভুলে যান বা ক্লায়েন্টের বর্ণিত নিয়মে কাজ সম্পন্ন না করে থাকেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্লায়েন্ট আপনার সমালোচনা করবে ও আপনাকেও তা গ্রহণ করার মানসিকতা রাখতে হবে যা থেকে শিখবেন। তবে খেয়াল রাখবেন কোনো কারণ ছাড়া যেনো ক্লায়েন্ট আপনার সমালোচনা বা অপমান না করে, এটি কোনোমতেই সহ্য করা উচিত নয়।

অভিযোজনযোগ্যতাঃ
এডাপ্টিবিলিটি বা অভিযোজনযোগ্যতা একজন ফ্রিল্যান্সারের আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার নিয়ামক হতে পারে। উদাহরণস্বরুপঃ কোভিড-১৯ মহামারীর সময় অধিকাংশ ফ্যাশন আউটলেট ও ট্যুর কোম্পানি ব্যবসায় পিছিয়ে গেলেও ই-কমার্স কিন্তু ঠিকই জমিয়ে ব্যবসা করেছে। পড়ুন এটিও ?? ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ কি।

এখানে মূল বিষয় হলো বর্তমান অর্থনীতিতে টাকা কোথায় আছে তা বুঝতে হবে। শুধু আপনার প্যাশন বা যা পারেন তা নিয়ে সবসময় পড়ে থাকলে আর্থিক দুর্দশায় পড়তে পারেন একজন ফ্রিল্যান্সার। তাই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার উচিত ইন্ডাস্ট্রির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে উন্নত করা।

আরও পড়ুনঃ নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং, ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কি কি যোগ্যতা লাগে?
উচ্চ-ঝুঁকি সহনশীলতাঃ
ক্যারিয়ার চয়েজ হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং অনেক ঝুঁকিপূর্ণ – এই বিষয় কারো কাছেই অজানা নয়। আপনার কাছে ক্লায়েন্টের সাথে দীর্ঘমেয়াদী কন্ট্রাক্ট না থাকলে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা সবসময় একটি চ্যালেঞ্জ হবে। কিছু সময় প্রচুর কাজ পেলেও আবার মাঝেমধ্যে যথেষ্ট কাজ পেতেও বেগ পেতে হতে পারে। আপনি কিভাবে ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম করতে হয় জেনে নিন।

একজন ফ্রিল্যান্সার কিন্তু কোনো ধরনের পেইড লিভ বা ভ্যাকেশন এর সুযোগ পান না। তাই অবশ্যই একজন ফ্রিল্যান্সারের উচিত তার আর্থিক, শারীরিক সকল অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এটা মাথায় রেখে যে এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

আর্থিক সাক্ষরতাঃ
একজন ফ্রিল্যান্সার হতে হলে অবশ্যই কর, বাজেট, মুদ্রাস্ফীতি, অবচয়, সুযোগ খরচ, অর্থের সময় মূল্য, ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি। কোনো ব্যবসার মত একইভাবে একজন ফ্রিল্যান্সারেরও এসব আর্থিক বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক। নাহলে যত বেশিই আয় হোক না কেনো, ঠিকই তা সহজে নিঃশেষ হয়ে যাবে।

আমি কি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবো
আমি কি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবো
উপসংহারঃ
আমি আশাকরি, আপনারা আজ এই “অনলাইনে কাজ করার আগে যেসব দক্ষতা থাকা দরকার” পোষ্টটি পড়ে সবাই উপকৃত হয়েছেন। কয়েকটি কঠিন শব্দ দ্বারা একজন ফ্রিল্যান্সার বা অনলাইনে কাজ করার জন্য দক্ষতার বিবরণ দেওয়া হলেও বিষয়গুলো বেশ সহজ কিন্তু। উল্লেখিত সাধারণ গুনগুলো না থাকলে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বেশ কঠিন সময় পার করতে হতে পারে। তাই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে অবশ্যই উল্লেখিত বিষয়ে নিজেকে পারদর্শী করার চেষ্টা করুন। আপনি চাইলে আমাদের Facebook Page এ যুক্ত থাকতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *