ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট | ভাষা আন্দোলন রচনা PDF

ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট
প্রিয় শিক্ষার্থীরা আমি আজ আপনাদের নিকট ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট রচনা নিয়ে আলোচনা করব। ভাষা জন্য আন্দোলন করে আমাদের লাখো ভাইয়েরা যুদ্ধ করে। 

আমরা পেয়েছি আমাদের বাংলা ভাষা। অনেক অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে। তাই চলুন ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট থেকে আমরা আপনাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্মন্ধে মনে করিয়ে দেই।
বন্ধুরা ভাষা আন্দোলন রচনা টি যদি আপনাদের সত্যিই ভালো লাগে তাহলে সবার নিকট শেয়ার করবেন। অবশ্যই একটি রেটিং দিয়ে দিবেন বন্ধুরা।

 ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট 

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন রচনা নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রচনা। ২১শে ফেব্রুয়ারি, ভাষা আন্দোলনের কিছু প্রবন্ধ ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল এবং এটি ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রচনা।
ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট
ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট

ভূমিকাঃ 

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগঠিত আন্দোলনই ভাষা আন্দোলন, যা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৫২ সালে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর প্রমুখ বাংলা ভাষাপ্রেমীর আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। অবশ্য এ আন্দোলনের বীজ রােপিত হয়েছিল আরাে আগে, অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
প্রকৃত বিচারে ভাষা আন্দোলন বাঙালির আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে উত্তরণের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন বাঙালি জাতীয়তাবােধের উন্মেষ ঘটে, অন্যদিকে সমগ্র বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হয়। এটি একইসঙ্গে ছিল তঙ্কালীন পূর্ববাংলার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। বলা যায়, ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের বীজমন্ত্র ।

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ঃ

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশ – পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় দুই হাজার কিলােমিটারের অধিক দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুটি অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগােলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলাে মৌলিক পার্থক্য ছিল। সমগ্র পাকিস্তানের শতকরা ৫৬ ভাগ মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। ১৯৪৮ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের বৈঠকে ইংরেজি ও উর্দুভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের অধিকার সংক্রান্ত এক সংশােধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন পূর্ব বাংলা থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এ প্রস্তাবের কঠোর সমালােচনা করেন। ফলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংশােধনী প্রস্তাব গৃহীত হয়নি।
ভাষা আন্দোলন রচনা PDF
ভাষা আন্দোলন রচনা PDF
বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে গড়ে ওঠে তমদুন মজলিস ও রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১৯৪৮ সালের ১০ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ধর্মঘট ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। ১১ই মার্চ পালিত সেই ধর্মঘটে পিকেটিংয়ের সময়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর কিছু দিন পরে ২১শে মার্চ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ ঢাকায় এক ভাষণে ঘােষণা করেন: “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’।
২৪শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে গিয়েও তিনি একই বক্তব্য রাখেন। যখন তিনি উর্দুর ব্যাপারে তার অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ করেন, উপস্থিত ছাত্ররা সমস্বরে না, না’ বলে চিল্কার করে ওঠে। তাক্ষণিকভাবে এ ঘােষণার প্রতিবাদে তারা বলে, উর্দু নয় বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যেও গভীর ক্ষোভের জন্ম হয়। বাংলা ভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।

ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ঃ

১৯৫২ সালের ২৭শে জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা। নাজিমুদ্দিন আবারও উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘােষণা দেন। এর ফলে পূর্ব বাংলার জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ২৯শে জানুয়ারি সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকা শহরে প্রতিবাদী মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলাে সম্মিলিতভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে সমগ্র পূর্ব বাংলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ধর্মঘটের আহ্বান করে।
আন্দোলন দমন করতে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে দিনটিতে ঢাকা শহরে সকল প্রকার মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘােষিত হয়। কিন্তু এ আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ প্যারা

একুশে ফেব্রুয়ারিঃ

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজের হাজার হাজার ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হয়। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রশ্নে পুরাতন কলাভবন প্রাঙ্গণের আমতলায় ঐতিহাসিক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা পাঁচসাতজন করে ছােটো ছােটো দলে বিভক্ত হয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চায়। তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ অস্ত্র হাতে সভাস্থলের চারদিক ঘিরে রাখে। বেলা সােয়া এগারােটার দিকে ছাত্ররা একত্র হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্রদের সতর্ক করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তখন পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করতে অনুরােধ জানান এবং ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময়ে কয়েকজন ছাত্রকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযােগে পুলিশ গ্রেফতার করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আরাে অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরাে অনেকে। শহিদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শােকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
২১শে ফেব্রুয়ারি-পরবর্তী আন্দোলন: ২১শে ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২শে ও ২৩শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র, শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে এবং সভা-শােভাযাত্রা সহকারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন শফিউর রহমান শফিক। ২৩শে ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও পুলিশ অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়। শহিদদের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে ওইদিন বিকেল থেকে রাত অবধি কাজ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হােস্টেল প্রাঙ্গণে ছাত্ররা নির্মাণ করে ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার। ২৪শে ফেব্রুয়ারি শহিদ মিনারটি উদ্বোধন করেন বাইশে ফেব্রুয়ারি শহিদ হওয়া শফিউর রহমানের পিতা। ২৬শে ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদ মিনারটি উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দীন।

এখানে আপনি আরও রচনা পাবেন>>

  1. বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা ২০ পয়েন্ট | বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা
  2. সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট | সময়ের মূল্য রচনা
  3. পড়ুন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা | বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট
  4. সত্যবাদিতা রচনা ২০ পয়েন্ট | সততা ও সত্যবাদিতা রচনা
  5. শীতের সকাল রচনা ২০ পয়েন্ট | একটি শীতের সকাল রচনা
  6. অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট | অধ্যবসায় রচনা PDF
  7. পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা | শিক্ষায় গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা
আরও পড়ুনঃ  আমাদের দেশ রচনা ক্লাস ৫ | আমাদের দেশ রচনা ক্লাস 4

ভাষা আন্দোলনের অর্জনঃ

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন ভাষাকেন্দ্রিক হলেও তা পুরাে বাঙালি জাতিকে অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে। এর ফল হিসেবে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল ব্যবধানে মুসলিম লীগকে পরাজিত করে। একুশের চেতনাকে ধারণ করে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনি ইশতেহার ছিল ২১ দফা সংবলিত। ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয়। ১৯৫৫ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘােষণা করে, যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযােগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপিত হয়। দিবসটির এই আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করতে কানাডা প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

ভাষা আন্দোলনভিত্তিক সাহিত্যরাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নতুন গতি লাভ করে। রচিত হয় ভাষা আন্দোলন-কেন্দ্রিক অনেক কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস। ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় একুশের প্রথম সাহিত্য সংকলন ‘একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। একই বছর মুনীর চৌধুরী কারাগারে বসে কবর নাটক রচনা করেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী লেখেন গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি। কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি কবিতা রচনা করেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী শামসুর রাহমান রচনা করেন বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা; আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ রচনা করেন মাগাে, ওরা বলে কবিতা। জহির রায়হান একুশকে নিয়ে রচনা করেন উপন্যাস ‘আরেক ফায়ূন (১৯৬৯)। এছাড়া ওই সময়পর্ব থেকে বর্তমান পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বাংলা সাহিত্য চর্চার অন্যতম অনুপ্রেরণা।

ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যঃ

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রধান তাৎপর্য এই যে, বাঙালি জাতি তার জাতীয়তাবােধ ও অধিকার সম্পর্কে প্রথম সচেতন হয়। ভাষার প্রশ্নে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এর ফলে পূর্ব বাংলায় গড়ে ওঠে একটি সচেতন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এরপর যত আন্দোলন সগ্রাম হয়েছে তার পেছনে কাজ করেছে ভাষা আন্দোলনের উজ্জ্বল স্মৃতি। ভাষা আন্দোলনের প্রেরণায় ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬-র ছয় দফা এবং ১৯৬৯-র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় অর্জিত হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য। এখনও সেই লক্ষ্য পুরােপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

উপসংহারঃ

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতিসত্তার পরিচয় নির্দেশক দিন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বীর ভাষা-শহিদদের অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। তবে তাঁদের আত্মদান তখনই সার্থক হবে, যখন বাংলাদেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে।

ভাষা আন্দোলন রচনা class 9
    ভাষা আন্দোলন রচনা Class 9    

ভূমিকাঃ

হাজার 947 সালের দেশভাগ হয় এবং তারপর থেকেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংঘটিত আন্দোলন হচ্ছে ভাষা আন্দোলন, চূড়ান্ত রূপ লাভ  করেছিল 1952 সালে। 1952 সালের ফেব্রুয়ারীতে সালাম, রফিক, জব্বার, প্রমুখ,  বাংলা ভাষা প্রেমিক আত্মদানের মধ্যে দিয়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রকর্তৃক স্বীকৃতি পায়। আর এই আন্দোলন বীজ রোপিত হয়ে আরো আগে, অন্যদিকে এর প্রক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। প্রকৃত বিচারে ভাষা আন্দোলন বাঙালির আত্মপরিচয় সংকট থেকে উত্তরণের প্রথম  ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন বাঙালি জাতীয়তা বোধের উন্মেষ ঘটে, কোন নদীকে অন্যদিকে সমগ্র পরাধীন ছিন্ন করে স্বাধীনতা   পথে অগ্রসর হয়। এটিএম শ্রীলংকার পূর্ব বাংলা সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের মধ্যে নিহিত বাঙালির স্বাধিকার বীজ মন্ত্র অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল এর মাধ্যমে।

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়েঃ

1947 সালের দ্বিজাতি তত্ত্বের ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয় দুই ভাগে অর্থাৎ ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়।ভাষা আন্দোলন রচনা পাকিস্তান রাষ্ট্রের ছিল দুটি অংশ- পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তান। প্রায় 2 হাজার কিলোমিটারের ব্যবধানে অবস্থিত পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে সংস্কৃতিক ভৌগলিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য ছিল। সমগ্র পাকিস্তানের শতকরা  56 ভাগ। মানুষের মাতৃভাষা বাংলা ছিল। 1948 সালে 23 শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের বৈঠকে উর্দু ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের অধিকার সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করে পূর্ব বাংলা থেকে নির্বাচিত সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। প্রধানমন্ত্রীর লিয়াকত আলী খান এ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেন।  ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সংসদীয় প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে গড়ে ওঠে তমুদ্দিন মজলিস এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।
1948 সালের 10 ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ধর্মঘট ডাকা সিদ্ধান্ত হয়। ভাষা আন্দোলন রচনা  11 মার্চ পালিত সেই ধর্মঘটে পিকেটিংয়ের সময় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। এর কিছুদিন পরেই 21 শে মার্চ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এক ভাষণে ঘোষণা করেন উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। চব্বিশে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন হলে গিয়ে তিনি একই বক্তব্য রাখেন। যখন তিনি উর্দুর ব্যাপারে তার  অবস্থানের কথা পুনরুল্লেখ উল্লেখ করেন , উপস্থিত ছাত্রের না ,না বলে চিৎকার করে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ে ঘোষণার প্রতিবাদে তারা বলে উর্দু নয় বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। পূর্ববাংলা জনগণের মধ্যে ক্ষোভের বিষয় ছিল। জন্ম হয়। বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবিতে আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে।

ভাষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ঃ

1952 সালের 27 শে জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। এর ফলে পূর্ব বাংলার জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। 29 শে জানুয়ারি সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকা শহরে প্রতিবাদে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি তারিখে সমগ্র পূর্ব বাংলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ও ধর্মঘটের আহ্বান করে। আন্দোলন দমন করতে পুলিশ 144 ধারা জারি করে। ফলের দিনটিতে ঢাকা শহরের সকল প্রকার মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। কিন্তু এই আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহুসংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

একুশে ফেব্রুয়ারিঃ

1952 সালে একুশে ফেব্রুয়ারি পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল 9 টা থেকে সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে ঢাকা শহরের স্কুল কলেজ হাজার হাজার ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সমবেত হয় । 144 ধারা ভঙ্গের প্রশ্নে পুরাতন কলা ভবন প্রাঙ্গণে আমতলায় ঐতিহাসিক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা 57 জন ছোট ছোট দলে বিভক্ত  হয় রাষ্ট্রভাষাবাংলা সাই স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চায়। তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ অস্ত্রহাতে চারিদিকে ঘিরে রাখি। বেলা সোয়া এগারটার দিকে ছাত্ররা একত্র হয়ে প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছাত্রদের সতর্ক করে দেয়।ভাষা আন্দোলন রচনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  তখন পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করতে অনুরোধ জানায় এবং ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় কয়েক জন ছাত্রকে 144 ধারা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর আরো অনেক ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনা  বিক্ষোভ মিছিল বের করে।  ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ 144 ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হয় রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ আরো অনেক। শহীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। শোকাবহ এ ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব বাংলায়  কঠোর  ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

একুশে ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আন্দোলনঃ

একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশ বিদ্রোহের আগুন। দাউদাউ করে জলে ওঠে। বাইশে 22 ও 23 শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র, শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, ও  সাধারণ জনতা  পূর্ণ হরতাল  পালন করে এবং সভা শোভাযাত্রা সহকারে 144 ধারা ভঙ্গ করে। 22 শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন শফিউর রহমান শফিক। 23 শে ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়ীয়ায় ছাত্র জনতার মিছিল। পুলিশের অত্যাচার নিপীড়ন চালায়। শহীদের স্মৃতি করে রাখতে ওই দিন বিকেল থেকে রাত অবধি। কাজ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ছাত্ররা নির্মাণ করে ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মিনার। চব্বিশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন 22 শে ফেব্রুয়ারি শহীদ হওয়া শফিউর রহমানের পিতা। ছাব্বিশে ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আব্দুল কামাল উদ্দিন।

ভাষা আন্দোলনের অর্জনঃ

1952 সালে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন ভাষাকেন্দ্রিক হলেও তা পুরো বাঙালি জাতিকে অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেন। এর ফল হিসেবে 1954 সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল ব্যবধানে  মুসলিম লীগ  কে পরাজিত করে। একুশের চেতনাকে ধারণ করে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল 21 দফা সংবলিত। ক্রমবর্ধমান গ

আরও পড়ুনঃ  বাংলা নববর্ষ রচনা ২০ পয়েন্ট | বাংলা নববর্ষ রচনা সহজ

ণআন্দোলনের মুখে 1954 সালে 7 এই মে পাকিস্তান। ভাষা আন্দোলন রচনাগণপরিষদে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত পায়। 1952 সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা একাডেমী প্রতিষ্ঠা হয়।  1956 সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান বাংলা ও  উর্দু কে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। 1999 সালের 17 নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা ও সাংস্কৃতিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপিত হয়।দিবস টি এই আন্তর্জাতিক করতে কানাডাপ্রবাসী রফিকুল আব্দুস উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।

উপসংহারঃ

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতিসত্তার পরিচয় নির্দেশ করে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বীরের ভাষা শহীদদের অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।ভাষা আন্দোলন রচনা তবে আত্মদান তখনই সার্থক হবে যখন বাংলাদেশের সর্বস্তরে  বাংলা ভাষা প্রচলন প্রথম সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র, স্থান, ব্যক্তি অর্থাৎ প্রত্যেক বাঙালি একটি  দায়িত্ব  ও কর্তব্য রয়েছে।

ভাষা আন্দোলন রচনা Class 6
ভাষা আন্দোলন রচনা Class 6
বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের জন্ম কোনো একক বা কতকগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনার সমষ্টি নয়। বরং এটি ঐতিহাসিক পরম্পরায় সংঘটিত ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাঙালি চেতনার সফল পরিণতি। কালের ধারায় গড়ে ওঠা এ জাতিচেতনা সুসংগঠিত ও সুসংহত হয়েছে উনিশশ বায়ান্ন খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।

ভাষা আন্দোলন রচনা Class 6

ভাষা আন্দোলনকে অনেকেই দেখেছেন শুধু ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই হিসাবে। তাই আজকে আমরা আমাদের এই পোষ্টটি ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সাজিয়েছি। আমাদের আজকের এই লেখা ভাষা আন্দোলন রচনা Class 6 এটি নিয়ে।

ভূমিকাঃ

১৯৫৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম হয়েছিল তাই একুশে ফেব্রুয়ারি। ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন হলো স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা অর্জনের চেতনা ও প্রেরণাস্বরূপ। ভাষা শহিদের রক্তেভেজা দিনটিই ‘শহিদ দিবস‘ নামে পরিচিত।

একুশের পটভূমিঃ

ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হয়। এরপর বাংলাদেশকে পূর্বপাকিস্তান নাম দিয়ে শাসনভার নেয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সরকার জেনারেল কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ ঢাকার কার্জন হলে বিশাল জনসভায় বলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। আবার ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এতে ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। মাতৃভাষা রক্ষার জন্য সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন শুরু করে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। দামাল ছেলেরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করে। পুলিশের গুলিবর্ষণে প্রাণ দেয় সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিকুর রহমানসহ আরও অনেকে। প্রাণের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেলো। ভাষা সৈনিক যেস্থানে প্রাণ দিয়েছিল সেস্থানে গড়ে উঠল কেন্দ্রীয় শহিদমিনার। মিনারটি উদ্বোধন করলেন শফিকুর বৃদ্ধ পিতা।

আন্দোলনঃ

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব জেলায়, মহকুমায়, গ্রামেগঞ্জে আন্দোলন শুরু হয়। জনগণ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবি জানায় সভাসমিতি, মিছিল ও শ্লোগানের মাধ্যমে। এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ পরিণত হয়, এতে প্রাণ দেন কিছু বাঙালি বীর।

ঘটনা প্রবাহঃ

আন্দোলন দমনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের আদেশে এদেশের ছাত্র, জনতার উপর বল প্রয়োগ করা হয়। 144 ধারা জারি, লাঠি চার্জ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ, গুলিবর্ষণ ইত্যাদি চলতে থাকে। তারপর 1952 সালের 38 জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীনের কথায় ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। ফলে আন্দোলন বানচাল করার জন্য তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী 20 ফেব্রুয়ারির বিকেলে 144 ধারা জারি করে। কিন্তু 21 ফেব্রুয়ারি সকাল 10-টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে আমতলায় 144 ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্র-জনতার এক বিরাট সমাবেশ।

একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনাঃ

দামাল ছেলেরা 21 ফেব্রুয়ারিতে 144 ধারা ভেঙে মিছিল বের করে। বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে দিয়ে দলে দলে রাস্তায় এসে নামে। বিকাল 3.30 মিনিটে অকস্মাৎ পুলিশ বাহিনি মিছিলে গুলি ছোঁড়ে। ফলে বর্তমান কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের কাছে প্রাণ দিল সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ অনেকেই। লাশ নিয়ে শোভাযাত্রা করলে পুলিশ গুলি চালালে শফিকসহ অনেকে শহিদ হন।

হত্যার প্রতিক্রিয়াঃ

মিছিলে গুলিবর্ষণ ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়। তরুণদের আন্দোলনকে কোনোভাবেই রোধ করতে না পেরে পাকিস্তানের শাসক দাবী মেনে নিতে বাধ্য হলো। বাংলাভাষা রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা পেল। ভাষা সৈনিকেরা যে স্থানে আত্মাহুতি দিয়েছিল সে স্থানে গড়ে উঠল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। মিনারটি উদ্বোধন করলেন শফিকুর রহমানের বৃদ্ধ পিতা।

উপসংহারঃ

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একুশে ফেব্রুয়ারি আপোষহীন সংগ্রাম ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তাই দিনটি আমাদের কাছে একটি সংগ্রামী ঐতিহ্য এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি বলিষ্ঠ চেতনা। 1952 সালে জয়ী মনোভাব আমাদের 1971 সালে যুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
বন্ধুরা, আশা করি আমাদের এই ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট রচনা টি আপনাদের ভাল লেগেছে। আশাকরি আকের ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ প্যারা লেখাটি সার্থক হয়েছে। আপনাদের আরো কিছু ভাষা আন্দোলন রচনা সম্পর্কে জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

এখানে আপনি আরও রচনা পাবেন>>

  1. বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা ২০ পয়েন্ট | বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা
  2. সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট | সময়ের মূল্য রচনা
  3. পড়ুন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা | বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা ২০ পয়েন্ট
  4. সত্যবাদিতা রচনা ২০ পয়েন্ট | সততা ও সত্যবাদিতা রচনা
  5. শীতের সকাল রচনা ২০ পয়েন্ট | একটি শীতের সকাল রচনা
  6. অধ্যবসায় রচনা ২০ পয়েন্ট | অধ্যবসায় রচনা PDF
  7. পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা | শিক্ষায় গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা
আরও পড়ুনঃ  স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০০ শব্দ | মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা
TAG: ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ পয়েন্ট,ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ব্যাখ্যা,ভাষা আন্দোলন রচনা PDF,Background of language Movement,1952 language movement,Bengali language movement,ভাষা আন্দোলন রচনা,ভাষা আন্দোলন রচনা ২০ প্যারা,ভাষা আন্দোলন রচনা class 9,ভাষা আন্দোলন রচনা class 10,বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন রচনা,ভাষা আন্দোলন রচনা পয়েন্ট,ভাষা আন্দোলন রচনা hsc,ভাষা আন্দোলন রচনা ২০০ শব্দ,ভাষা আন্দোলন রচনা ১০০০ শব্দ,ভাষা আন্দোলন রচনা class 6,ভাষা আন্দোলন রচনা class 5,১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন রচনা

About the Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like these

Share via
Copy link