আমি যখন ছোট তখন থেকেই আমি চিন্তা করতাম পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩৩ কেন হলো। আজকে আমি সেই সম্মন্ধে আপনাদের এই ব্লগে জানাব।
ছোটবেলা থেকেই আমি গণিতে খুব একটা ভালো ছিলাম না। সবার লক্ষ্য ছিল ৮০ এর দশকে কীভাবে গোল করা যায় এবং আমি ভাবতাম কীভাবে পাস করব। আমি মাত্র কয়েকটি সম্ভাব্য অংক করেই পরীক্ষার হলে যেতাম।
![কিভাবে এবং কেন পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩৩ হলো? 2 পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩৩.webp](https://sohobanglait.com/wp-content/uploads/2023/09/পরীক্ষায়-পাস-নম্বর-৩৩.webp)
অনেক কষ্ট করে টেনেটুনে পেতাম ৩৩ নাম্বার। আরপর যদিও অংকের ভয় একসময় আমার কেটে যায়, শুধু আমার স্কুল নয় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অধিকাংশ স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের ভেতর ৩৩ পেলেই পাস। নয়তো কপালে জোটে ফেল।
স্কুল জীবনে আমরা যেই ফেল করি বা পাস করি না কেন, আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন আপনাকে পাস করতে 33 নম্বর পেতে হবে? কম বা বেশি হবে না কেন?
পরীক্ষায় পাস নম্বর কেন ৩৩ হলো?
শুধু আমাদের দেশেই নয় ভারত ও পাকিস্তানেও শিক্ষার্থীদের পাস করতে ৩৩ শতাংশ নম্বর প্রয়োজন। এই তিনটি দেশের কথা বলতেই খানিকটা অনুমান করা যায় পাস করতে ৩৩ শতাংশ মার্ক ব্রিটিশদের থেকে আরোপ করা থেকে এসেছে।
১৭৫৭ সালে ব্রিটিশরা নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করে উপমহাদেশ দখল করে। এর ১০০ বছর পর ভারতের জনগণ স্বাধীনতা ফিরে পেতে ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ আন্দোলন করে। তবে সিপাহি বিদ্রোহ দমন করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে সরাসরি ভারত শাসনের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশ প্রধান।
আরও পড়ুন>>
- SSC Test Exam 2024 শুরু ১ অক্টোবর, Test পরিক্ষার প্রশ্ন দেবে বোর্ড
- বাংলালিংক অপারেটর দিচ্ছে ৬৩টাকা ক্যাশব্যাক | নগদ রিচার্জ ক্যাশব্যাক অফার ২০২৩
- কম খরচে Banglalink Call Rate Offer 2023
এরপরের বছর অর্থাৎ, ১৮৫৮ সালে প্রথমবারের মতো উপমহাদেশে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা চালু হয়। কিন্তু পাস কত নম্বরে হবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পরামর্শের জন্য দ্বারস্থ হন ব্রিটিশদের কাছে। ব্রিটেনে তখন ১০০ তে ৬৫ নম্বরে পাস ছিল।
এদিকে ব্রিটিশ লর্ডরা ভাবতেন, উপমহাদেশের লোকের জ্ঞান-বুদ্ধির মাত্রা ব্রিটিশদের তুলনায় অনেক কম। তাদের প্রচলিত কথা মতে, ‘দ্য পিপল অব সুবকন্টিনেন্ট অর হাফ এস ইন্টেলেকচুয়াল অ্যান্ড এফিসিয়েন্ট এস কম্পারেড টু দ্য ব্রিটিশ’ অর্থাৎ বুদ্ধি ও দক্ষতায় উপমহাদেশের মানুষকে ইংরেজদের তুলনায় অর্ধেক।
তাই পাসমার্ক হবে ৬৫ এর অর্ধেক ৩২.৫। ১৮৫৮ সাল থেকে ১৮৬১ সাল পর্যন্ত কিন্তু পাস নম্বর ৩২.৫ ছিল। ১৮৬২ সালে তা গণনার সুবিধার্থে বৃদ্ধি করে ৩৩ করা হয়। সেই থেকে এই ৩৩ নম্বরই পাসমার্ক হিসেবে বিবেচিত হয়।
শেষ কথা
এত বছর পরও আমরা ব্রিটিশদের নিয়ম মেনে চলেছি। তবে শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রেই নয়, আমাদের উপমহাদেশের অনেক কিছুই এখনও ব্রিটিশ নিয়ম মেনে চলছে। এর মধ্যে এখনও পরিক্ষায় 33 পাস নম্বর রয়েছে।
আরও পড়ুন>>
- নিঝুম দ্বীপ কোথায় অবস্থিত কোন নদীর মোহনায় | নিঝুম দ্বীপ
- যেভাবে দেখছে ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র খাতা | এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩
- শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১৬২০০ টাকা উপবৃত্তি প্রদান করবে | কোন কোন শিক্ষার্থী টাকা পাবে জেনে নিন
আশাকরি বন্ধুরা আমাদের এই লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে। যদি তাই হয় তবে আমাদের পোষ্টটি শেইয়ার করে দিবেন। এবং আমাদের ফেসবুক গ্রুপে আপনাদের আমন্ত্রন রইল, ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন থাকার জন্য।
FAQs: পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩৩% হলো কেন
পরীক্ষার পাশ মার্ক ৩৩ কেন?
পরীক্ষার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান-প্রতিভা, সৃজনশীলতা ইত্যাদি যাচাই করা যায়। এই ক্ষেত্রে, 100 নম্বর পূর্ণ নম্বর হিসাবে নেওয়া হয়। যদি কেউ এই 100 নম্বরের এক তৃতীয়াংশ পায় তাহলে ধরে নেওয়া হয় যে শিক্ষার্থী ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে। সেজন্য পাসের নম্বর ৩৩।
পাশ নাম্বার ৩৩ কেন?
আসলে আমাদের ঔপনিবেশিক মনোভাব ছোটবেলায় থেকেই দেখে আসছি পরীক্ষায় ১০০ তে ৩৩ পেলেই তাকে কৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো। তখন ভাবতাম হয়তো তিন ভাগের এক ভাগ নম্বরকে পাশ মার্ক হিসেবে ধরা হয়, তাই ৩৩ পেলেই তাকে পাশ করে দেয়া হয়।
১০০ তে পাস মার্ক কত?
আমরা প্রায় সকলেই স্কুল-কলেজে পরিক্ষা দিয়েছি। আর পরিক্ষা ১০০% আর মধ্যে নূন্যতম ৩৩% মার্ক না পেলে আমরা ফেইল বা অকৃতকার্য বলে বিবেচিত হতাম।