শ্রাদ্ধকর্মে কাকের গুরুত্ব কি? কাককে কেনো খাবার দেওয়া হয়?

শ্রাদ্ধকর্মে কাকের গুরুত্ব কি

প্রিয় পাঠকগন, আপনারা এখানে অনেকেই আছেন যারা ধর্মপ্রাণ সনাতন ধর্মালম্বী। শ্রাদ্ধকর্মে কাকের গুরুত্ব কি? তা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। সবাই জানে থাকবেন যে, কেউ মারা গেলে কাক কে খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কেনো? আর এই প্রশ্নের উত্তর ধর্মীয়কোন থেকে নয় বাস্তবতার দিক থেকে দিব। নিম্নক্ত লেখাটি সুকুমার বিট এর থেকে সংগ্রহ করা।

আমাদের পূর্বপুরুষরা বলতেন,
তোরা কাককে এক মুঠো খেতে দিস।

একই কথা বলতেন প্রাচীন মুনিঋষিরাও! তারা যে কাককে খাবার খাওয়াতে বলতেন, সেই সব প্রাচীন মহোদয়রা কি অজ্ঞ ছিলেন? তাঁরা বলতেন, কাককে খাবার খাওয়ালে আমাদের পূর্বজদের খাওয়ানো হয়। তাই কি? আসলে তা নয় । আমাদের ধর্মের ধর্মপ্রাণ মুনিঋষিরা ভুল ছিলেন না। তাঁরা সূক্ষ্ম বুদ্ধি সম্পন্ন ছিলেন।

শ্রাদ্ধকর্মে কাকের গুরুত্ব কি? এর সঠিক কারন নিম্নে দেওয়া হলো

আপনারা কখনো কি কাউকে বট বা অশ্বত্থ গাছের চারা রোপণ করতে দেখেছেন অথবা নিজেরা লাগিয়েছেন? অশ্বত্থ বা বটগাছের বীজ পাওয়া যায় কি? এর জবাব হলো না । বট বা অশ্বত্থ গাছের কলম যতই রোপণ করুন না কেন, তা লাগবে না, কেননা প্রকৃতি এই দুই উপযোগী বৃক্ষের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রেখেছে।

আরও পড়ুনঃ  নতুন বাস ভাড়ার তালিকা ২০২৩ | নতুন বাস ভাড়ার চার্ট

উক্ত দুটি বৃক্ষের ফল কাক খায় আর তার পেটেই বীজের অঙ্কুরোদগম হয়। কাকের মলত্যাগের মাধ্যমে সেই বীজ ধরিত্রীর মাটিতে পড়ে, আর তার থেকেই এই দুই বৃক্ষের জন্ম হয়। অশ্বত্থ এমনই এক বৃক্ষ যা Round The Clock অক্সিজেনের যোগান দেয়। আর বট হলো এক ঔষধি গুণ সম্পন্ন বৃক্ষ
তাই দুই বৃক্ষের জন্মের ভারসাম্য রাখতে হলে কাকের মতো পক্ষীর সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়। তাই কাককে রক্ষা করতে হবে। আর তা কি করে সম্ভব?

স্ত্রী কাক ভাদ্র মাসে ডিম দেয়, আর নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী এই পক্ষীর পৌষ্টিক আর ভরপুর আহারের প্রয়োজন, তাই মুনিঋষিরা শ্রাদ্ধের সময় কাকের জন্য পৌষ্টিক আহারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যাতে কাকের প্রজন্ম রক্ষা পায়।

আরও পড়ুনঃ  অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম ও নমুনা | অঙ্গীকারনামা চুক্তি পত্রের নমুনা
কাককে কেনো খাবার দেওয়া হয়
কাককে কেনো খাবার দেওয়া হয় তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে

তাই আমরা যে, পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে কাককে খাওয়ানোর প্রথা পালন করি, তা প্রকৃতির রক্ষণের জন্য নিতান্ত আবশ্যক। আর অশ্বত্থ এবং বট বৃক্ষ দেখলেও আমাদের সেই পূর্বজদের কথা স্মরণে আসবে, যাঁদের কারণে আজও আমরা এই দুই বৃক্ষকে পৃথিবীতে দেখতে পাচ্ছি ।

সনাতন ধর্মের নানা প্রথাকে যারা কুসংস্কার বলেন, তারা একটু চিন্তা করে দেখুন, যখন বিজ্ঞান ছিলো না, তখনো এই সনাতন ধর্মের লোকেরাই জানতো কোন রোগের কোন ঔষধি, কোন খাবার খাওয়ার যোগ্য, কোনটা নয়। আমাদের সনাতন ধর্ম হলো অথৈ জ্ঞানের ভাণ্ডার, তার শিক্ষা পদ্ধতির জন্য আমাদের ঋষিমুনিদের প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা উচিত। আসুন আমরা আশেপাশের লোকের কথায় অন্ধবিশ্বাসে না জড়িয়ে সকল পশু-পাখিকে ভালোবাসি। সকল পশুপাশিকে আপন করে নেই। সকালে বিকালে বাড়ির আঙ্গিনায়/বারান্দায় পাখিদের জন্য অল্প হলেউ খাবার দেই। দেখবেন প্রকৃতি আবারো তার নিজস্ব প্রাণ ফিরে পাবে। প্রাণকে মূল্যায়ন করুন, প্রাণীদের ভালোবাসুন। শ্রাদ্ধে কেনো কাককে খাবার দেওয়া হয় তা পুরানের মাধ্যমে জেনে নিন।

আরও পড়ুনঃ  জেনে নিন ৭ই মার্চের ভাষণের বিষয়বস্তু কয়টি ছিল

এই পোষ্টগুলি পড়ে আপনাদের ভালো লাগলে এবং জ্ঞানার্জন হলে নিচে থেকে সাবস্ক্রাইব করে দিন। এবং আমাদের সোসাল মিডিয়াগুলিতে যুক্ত হোন। আমরা এমন অজানা আরও বিষয় তুলে ধরব।

আমাদের অন্যান্য পোষ্ট>> 
  1. ইন্টারস্টেলার চলচ্চিত্রটির মূলভাব কী?
  2. কিভাবে ধ্বংস হলো মঙ্গল গ্রহে জীবন তা নিয়ে এই Informative পোষ্ট
  3. সার্চ ইঞ্জিন কাকে বলে? সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে google এর প্রয়োজনীয়তা
No schema found.

About the Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like these

Share via
Copy link