রিয়েল এস্টেট ব্যাবসা করে মাসে লাখ টাকা আয়, জেনে নিন রিয়েল এস্টেট মানে কি?

রিয়েল এস্টেট ব্যাবসা করে মাসে লাখ টাকা আয়

মানুষের আবাসনের চাহিদা মেটাতে আপনি একটি রিয়েল এস্টেট ব্যাবসাও গড়ে তুলতে পারেন। আপনি রিয়েল এস্টেট উদ্যোক্তাদের বাড়ি ভাড়া, সরবরাহ এবং পরামর্শ প্রদান করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।

  • কিভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা স্টার্ট করবেন?
  • ব্যবসা শুরু করতে কি কি লাগবে? কিভাবে সফল হতে হবে?
  • রিয়েল এস্টেট মার্কেটিং কি?

আমি আজকের এই আর্টিকেলে এগুলি সম্পর্কে ছোট ধারণা দেব। পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন, অন্যথায় আপনি বুঝতে পারবেন না।

রিয়েল এস্টেট ব্যাবসা মানে কি?

জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিস ইত্যাদি বিক্রি ও ক্রয়কে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলে। মানুষের জীবনের প্রধান চাহিদা অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান। শালীন জীবন যাপনের জন্য প্রতিটি মানুষেরই প্রয়োজন আশ্রয়।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসা মানুষের এই চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। এই ব্যবসা শুধুমাত্র থাকার জায়গার অভাব পূরণের লক্ষ্য নয়। অফিস, দোকান, মার্কেট, মাল্টিপ্লেক্স, ফ্ল্যাট ইত্যাদির ব্যবস্থা করা এই ব্যবসার অন্যতম লক্ষ্য।

পড়ুনঃ মশার কয়েল তৈরি করে লাখ টাকা আয়

১০টি বাংলাদেশি Real Estate কম্পানির নাম নিচে দেওয়া হলো:

  1. Bashundhara Group ~ আয়: ৯০৩ মিলিয়ন প্রায়
  2. Navana Real Estate ~ আয়: ৫০১ মিলিয়ন প্রায়
  3. Rangs Properties Ltd ~ আয়: ৩০২ মিলিয়ন প্রায়
  4. Sanmar Properties Ltd ~ আয়: ৩০২ মিলিয়ন প্রায়
  5. Concord Real Estate ~ আয়: ২০১ মিলিয়ন প্রায়
  6. Assure Group ~ আয়: ১০১ মিলিয়ন প্রায়
  7. Building Technology & Ideas Ltd ~ আয়: ১৯৪.৫ মিলিয়ন প্রায়
  8. Amin Mohammad Group ~ আয়: ১৬৪.৭ মিলিয়ন প্রায়
  9. Anwar Landmark ~ আয়: ১৩১ মিলিয়ন প্রায়
  10. Sheltech (Pvt.) Limited ~ আয়: ১৫০ মিলিয়ন প্রায়।

যাইহোক, একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করার পদক্ষেপ কি? নীচে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার প্রতিটি ধাপ রয়েছে। আপনারা মন দিয়ে পড়ুন।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এর ভিডিও তথ্য

১) পরিকল্পনা গ্রহন করুন

প্রতিটি ব্যবসায় পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসা শুরু করলে কখনই সফল হওয়া যায়না। তাই আগে ব্যবসা নিয়ে গবেষণা করুন, তারপর ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিন।

মানুষ যেমন সহজে ব্যবসায় প্রচুর আয় করতে পারে তেমনি সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই ব্যবসায় ঝাঁপিয়ে পড়লে লোকসানের মুখে পড়ে। তাহলে আগে থেকেই ভাবুন কিভাবে ব্যাবসা করবেন?

আরও পড়ুনঃ  চাকরির টেনশন ভুলে যান, ঘরে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করুন, মাসে ভালো পরিমানে আয়!

প্রথমে, নতুন ব্যবসা পরিকল্পনার জন্য ৮টি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ পড়ুন। তারপর আপনার পরিকল্পনা তৈরি করুন, নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে।

ছবি

২) পুঁজি বা মূলধন বিনিয়োগ

রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাই আপনার ব্যবসার জন্য একটি স্থায়ী অর্থ সংস্থান বিবেচনা করা উচিত। যাতে কোন আর্থিক সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে না হয়। আর্থিক সমস্যা দ্বারা ব্যবসায় প্রভাব ফালানো উচিত নয়।

তাই হঠাৎ করে রাতারাতি কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই, অর্থ বিনিয়োগ না করে, আপনি যদি অন্য কোনো চলমান ব্যবসায় বা স্থায়ী চাকরির সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে আপনি ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসাকে অল্প অল্প অর্থের মাধ্যমে প্রসারিত করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি আপনার বিশ্বস্ত বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে অংশীদারিত্বে একসাথে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা চালাতে পারেন। এটি আপনাকে আর্থিক সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।

প্রাথমিকভাবে, আপনি মানুষের বাড়ি মেরামত বা ছোট ফ্ল্যাট এবং দোকান নির্মাণ করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় প্রবেশ করতে পারেন। আপনার ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার কম মূলধন আছে, তাহলে আপনি একটি বড় রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে যোগ দিতে পারেন।

৩) Real Estate ব্যাবসার অফিস স্থাপন

যোগাযোগ কেন্দ্র হিসাবে আপনার নিজের অফিসের প্রয়োজন হবে। অফিস স্থাপনের জন্য এমন একটি জায়গা বেছে নিন যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং লোকেরা সহজেই জায়গাটিতে গিয়ে রিয়েল এস্টেট অফিস খুজে পেতে পারে।

এটি আপনার ব্যবসাকে আরও বিশ্বস্ত করে তুলবে। আপনি যত বেশি আপনার অফিস সাজাবেন, তত বেশি আপনি আপনার গ্রাহকদের রিয়েল এস্টেট শিল্পে আপনার দক্ষতার সাথে মুগ্ধ করবেন।

আপনার অফিসের অসাধারন ডিজাইনই আপনার ক্রেতার কাছে প্রমাণ করবে যে আপনি একজন ক্রেতাকে কতটা উপযুক্ত থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাই আপনার অফিসকে আকর্ষণীয়ভাবে ডিজাইন করার চেষ্টা করুন।

পড়ুনঃ ধূপকাঠি ব্যবসা: এক্কেবারে আরামের ব্যাবসা, বিক্রি নিয়ে নেই চাপ! লাখ টাকা ইনকাম!

৪) অর্থনৈতিক জ্ঞানার্জন

অর্থনীতির জ্ঞান না থাকলে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব। লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশে আপনি যত বেশি দক্ষতা দেখাতে পারবেন, তত বেশি সাফল্য পাবেন।

ধরুন আপনি একটি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করলেন। এখন আপনাকে অর্থনীতির জ্ঞান ব্যবহার করে লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে হবে, প্রকল্পে আপনার কত খরচ হবে, প্রকল্পে কাজ শুরু করার আগে আপনাকে কাজের খরচ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আপনি সঠিকভাবে গণনা করতে না পারলে, আপনি লাভ করতে পারবেন না এবং আপনি আপনার মূলধন হারাতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  মশার কয়েল তৈরি করে লাখ টাকা আয় - জানুন কিভাবে!

আবার, কিছু কিছু প্রজেক্টর কাজ নাও পেতে পারেন, কারণ আপনি যদি হিসেব সঠিকভাবে বুঝতে না পারেন এবং প্রচুর অর্থ দাবি করেন তবে কেউ আপনার সাথে তাদের কোনও প্রকল্প তৈরি করতে চাইবে না। তাই আপনি যদি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় উদ্যোক্তা হতে চান,তাহলে অর্থনীতির সকল বিষয় সম্পর্কে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করুন।

৫) রিয়াল এস্টেট ব্যাবসার কয়টি বিভাগ?

এই ব্যবসার কিছু বিভাগ আছে। আপনি কোন ক্যাটাগরিতে ব্যবসাটি গ্রহণ করবেন তা সম্পূর্ণরূপে আপনার ইচ্ছা এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে। ক্যাটাগরিগুলি হচ্ছে:

  1. Residential Real Estate
  2. undeveloped land
  3. Industrial Real Estate
  4. Commercial Real Estate
  5. Property used by the public for special purposes

৬) ব্যাবসাতে নিবন্ধন

রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য রয়েছে অনেক নিয়ম-কানুন। রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার হিসাবে নিবন্ধনের জন্য নিম্নলিখিত নথিগুলির প্রয়োজন হয়ে থাকেঃ

  • Trade license.
  • Tax Identification Number (TIN) Certificate.
  • Value Added Tax Registration Number.
  • Experience in project formulation and implementation (if any); Certificate of Qualification of Technical Persons (Certificate of Educational Qualification of Architects, Engineers and Planners and Certificate of Membership of the concerned professional bodies).
  • In case of company, Certificate of Incorporation with Memorandum of Association and Articles of Association.

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (REHAB) বা ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নিবন্ধনের কপি, যদি থাকে।

ব্যবসা সফলভাবে চালানোর জন্য, পরিকল্পনা করার পর এর ২য় ধাপের বৈধকরণ খুবই প্রয়োজন। যদিও বৈধতা ক্রেতাদের আপনার ব্যবসার প্রতি আস্থা দেয়। এটি আপনাকে যেকোনো আইনি ঝামেলা থেকেও দূরে রাখে।

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় আপনি বিভিন্ন আইনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। যেমন জমি রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন এবং অন্যান্য বিভিন্ন কাগজপত্র সংক্রান্ত বিষয়। কিন্তু এতে অযথা বিচলিত না হয়ে আপনি সততা ও সাহসিকতার সাথে আইনি উপায়ে সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন, তাহলে ক্রেতাদের কাছে নিজেকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারবেন।

৭) রিয়েল এস্টেট ব্যাবসার নিয়ম-কানুন

ভূমির(জমি) মালিকের সাথে জমি আদান প্রদানের নিয়মঃ

জমির মালিক এবং বিকাশকারীর(Developer) মধ্যে একটি লিখিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি (জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্ট) করতে হবে। ডেভেলপার কর্তৃক প্রাপ্ত শেয়ারের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে এবং প্রাপ্ত অংশের সাথে ভূমি উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও সমাপ্ত করার সময় উল্লেখ করতে হবে।

ডেভোলপারের দায়িত্বঃ

প্রসপেক্টাসে রিয়েল এস্টেটের রেজিস্ট্রেশন নম্বর সহ তার নাম, ঠিকানা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত পরিকল্পনার অনুমোদন নম্বর স্মারক নম্বর এবং তারিখের সাথে উল্লেখ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  শীতকালের ব্যাবসা: ৪ ঘন্টা কাজ করলেই লাখ লাখ টাকা আয়! জেনে নিন পদ্ধতি।

কোন প্রকল্প অনুমোদনের আগেই সেটা ক্রেতার নিকট বিক্রি করা বা বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না। ক্রেতাকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা সংক্রান্ত দলিলপত্র দেখাতে হবে।

প্রত্যেক ডেভেলপারকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পেরভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪, প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে, এবং প্রযোজ্য ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট এর নক্‌শার অনুমোদন, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়ন, সংশোধন, পুনঃঅনুমোদন বা নবায়ন করতে হবে।

বেসরকারী বা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান নির্ধারিত পদ্ধতিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নবিধিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী নাগরিক সুবিধাদি, যতদূর সম্ভব, নিশ্চিত করতে হবে।

প্রত্যেক ডেভেলপারকে প্রাসঙ্গিক আইন ও প্রবিধান অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে যেকোনো ধরনের অবকাঠামো বা প্লট বা ফ্ল্যাট বা রাস্তা, বিদ্যুৎ সংযোগ, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও নিষ্কাশন, গ্যাস সরবরাহ এবং টেলিফোন সংযোগ এবং প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য সুবিধাগুলি বাস্তবায়ন করতে হবে।

৮) নিজের ব্রান্ড তৈরিঃ

ব্র্যান্ডিং ব্যবসা সফল করার একটি মূল অংশ। আপনার রিয়েল এস্টেট ব্যবসাকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য ব্র্যান্ডিং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি যত বেশি ভোক্তার চাহিদার উপর ফোকাস করবেন, আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ডিং গুণমান তত ভাল হবে। মার্কেটিং পরিকল্পনা কি? মার্কেটিং পরিকল্পনার ৮টি ধাপ। আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ডিং করার জন্য একটি সুন্দর লোগো অপরিহার্য। এবং যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে তবে এটি আরও ভাল।

ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে আমাদের মেইল করুন। আমরা প্রফেশনাল ভাবে দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ ওয়েবসাইট ডিজাইন করে আসছি।

উপসংহার

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সফল হতে আপনার প্রচুর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, অভিজ্ঞতা ছাড়া আপনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবেন না। আপনি যদি কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়াই একটি বড় প্রকল্প হাতে নেন, তাহলে আপনি বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন এমনকি মূলধন/মূলধন হারাতে পারেন এবং আপনি নিঃস্ব হয়ে যেতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ

About the Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like these

Share via
Copy link