Contents
কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা ভূমিকা:মানবজীবনে কৃষির গুরুত্ব: কৃষিকাজে বিজ্ঞানের প্রবেশ:কৃষির আধুনিকায়নে বিজ্ঞান:প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ:কৃষি ও বিজ্ঞান গবেষণা:উন্নত বিশ্বের কৃষি: কৃষি ও বাংলাদেশ: কৃষিতে বিজ্ঞান ও অপপ্রয়োগ:উপসংহার: আরও পড়ুনঃ কৃষিকাজে বিজ্ঞান রচনা ssc ভূমিকাঃকৃষি বিজ্ঞানঃকৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নঃকৃষি কাজে প্রযুক্তির ব্যবহারঃকৃষি কাজে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাঃবাংলাদেশে কৃষির ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবঃআমাদের দেশে কৃষি ও কৃষকঃউন্নত বিশ্বে কৃষিঃউপসংহারঃআরও পড়ুনঃ পরিশেষে
প্রিয় ভিজিটরস, আজকের এই কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা টি যেকোন শ্রেণির জন্য। যারা ৭ম শ্রেনীতে আছে তাদের জন্যও এই কৃষিকাজে বিজ্ঞান রচনাটি। আবার ক্লাস দশম শ্রেনীতে আছো তাদের জন্য এই কৃষিকাজে বিজ্ঞান রচনা। অর্থাৎ ক্লাস ৭ম শ্রেনী থেকে ১০ম দশম শ্রেনী পর্যন্ত সবার প্রযোজ্য এই কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা।
কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা
দৈনন্দিন জীবনে আমরা যা কিছু করি সব কিছুতেই বিজ্ঞানের বিশেষ অবদান রয়েছে। আমাদের কৃষি নির্ভর দেশে কৃষি কাজে বিজ্ঞানের অবদানও অপরিসীম। চাষের কঠোর পরিশ্রমের কাজ গুলিকে বিজ্ঞান অনেক সহজ সরল করে দিয়েছে।উন্নত মানের বীজ,সার,কীটনাশক,কিভাবে আমাদের দেশের কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে তা নিয়েই আজকের উপস্থাপন কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা।
কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা ২০ পয়েন্ট
কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা ২০ পয়েন্ট
ভূমিকা:
কৃষিকাজ হলো আমাদের সমাজের প্রধান ভিত্তি স্বরূপ। মাথার ওপর কৃষিকাজের ছাউনি থাকার ফলেই আমরা দুবেলা পেট ভরে খেয়ে পড়ে অন্য চিন্তার অবকাশ পাই। সে কারণে সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে আমাদের সমাজে কৃষিকাজের গুরুত্ব সর্বাধিক। অতীত কাল থেকেই কিভাবে কৃষিকে উন্নত করে সহজে অধিক ফলন লাভ করা যায় সে বিষয়ে মানুষ নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। সময় যত এগিয়েছে, বিশ্বের জনসংখ্যা যত বেড়েছে, ততোই বেড়েছে কৃষিতে অধিক ফলনের প্রয়োজনীয়তা। কৃষি মানুষের প্রাথমিক চাহিদা মেটায়। পৃথিবীর মানুষের এই প্রাথমিক চাহিদা মেটানোর তাগিদে কৃষির সঙ্গে সংমিশ্রণ ঘটেছে বিজ্ঞানের। বিজ্ঞান কৃষিকে উপহার দিয়েছে কাঙ্খিত অধিক ফলন। বিজ্ঞানের দানেই কৃষি আজ আর অতীতের মতো পরিশ্রমসাধ্য নেই। তাই কৃষিকাজে বিজ্ঞানের এই ব্যাপক ও বহুমুখী অবদানকে স্মরণে রেখেই এই প্রতিবেদনের উপস্থাপনা।
মানবজীবনে কৃষির গুরুত্ব:
কৃষি মানুষের অস্তিত্বের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। মানবজীবন ও মানবসমাজে এর গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে এটি মানুষের আদিমতম জীবিকার উপায়। দেশে দেশে কৃষিই সমাজের মেরুদণ্ড, কৃষিই সমাজের ভিত্তি। স্বভাবতই কৃষির ক্রমোন্নতিতেই সমাজের ও দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি। এই উন্নতিতে অনন্য ও অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছে বিজ্ঞান। আজকের বিশ্বে প্রতিটি ক্ষেত্রের মতো কৃষিক্ষেত্রেও বিজ্ঞানই আজ বাড়িয়ে দিয়েছে তার সুদূরপ্রসারী কল্যাণী হাত।
মানবজীবনে কৃষির গুরুত্ব
মানবজীবনে কৃষির গুরুত্ব
কৃষিকাজে বিজ্ঞানের প্রবেশ:
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে বিশেষ জ্ঞানের সংমিশ্রণে কৃষিকাজ শুরু হলেও সময়ের সাথে সাথে মানুষ তথাকথিত অপ্রাসঙ্গিক নানা বস্তুকে কৃষিকাজের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক করে তুলতে শেখে। এই পর্বকেই কৃষিকাজে বিজ্ঞানের প্রবেশের পর্ব হিসেবে মনে করা হয়। এই পর্বে মানুষ প্রথম মাটি খোঁড়ার জন্য ধারালো অস্ত্র হিসেবে আবিষ্কার করে লাঙ্গলের। অতি দ্রুত অধিক পরিমাণ জমি ধারালো লাঙ্গল দ্বারা কর্ষণের জন্য শেখে বিভিন্ন গবাদিপশুকে ব্যবহার করতে। এই সকল গবাদি পশু মানুষকে লাঙ্গল ব্যবহার করে অনেক খালি জমি তুলনামূলক কম পরিশ্রমে স্বল্প সময়ে কর্ষণ করতে সাহায্য করত। কৃষিকাজে বিজ্ঞান প্রবেশের এই পর্বেই মানুষ শিখেছিল নিকটবর্তী নদী কিংবা পুকুর থেকে খাল কেটে নিজের জমিতে নিয়ে আসতে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক জলসেচের ধারণাও এই যুগেই পরিণতি লাভ করেছিল।
এই যুগের পরবর্তীতেই বিজ্ঞান মানুষকে শিখিয়েছিল জৈব সার দ্বারা জমির উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করতে; শিখিয়েছিল উৎপাদিত ফসলকে দীর্ঘকাল নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করতে। এরপর সময় যত এগিয়েছে কৃষিকাজে বিজ্ঞানের প্রয়োগমূলক চরিত্রে হয়তো বিবর্তন এসেছে; কিন্তু কৃষিকাজ ও বিজ্ঞানের এই প্রাথমিক সম্পর্ক এখনো পর্যন্ত বদলায়নি।
কৃষির আধুনিকায়নে বিজ্ঞান:
আঠারো শতকের শেষদিকে এবং উনিশ শতকের গোড়ার দিকে শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকায়নের সূচনা ঘটে। এর ফলে কৃষকেরা কৃষিক্ষেত্রে উন্নত ধরনের যন্ত্রপাতি ও কৃষিপদ্ধতির সাথে পরিচিত হয়। জন্তু আর কাঠের লাঙলের পরিবর্তে কৃষকদের হাতে আসে কলের লাঙল, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার। বিজ্ঞানের কল্যাণে উন্নত দেশগুলোতে জমিকর্ষণের পুরোনো পদ্ধতিগুলো লোপ পেয়েছে। সেচ ব্যবস্থাতেও বিজ্ঞান অনেক পরিবর্তন এনেছে। কৃষকদের এখন ফসলের জন্যে প্রকৃতির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না। গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে জমিতে পানিসেচের ব্যবস্থা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সেচের জন্যে ভূগর্ভস্থ পানি তুলতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিদ্যুৎশক্তি চালিত পাম্প।
কৃষির আধুনিকায়নে বিজ্ঞান
কৃষির আধুনিকায়নে বিজ্ঞান
অতিবৃষ্টিও আজ কৃষককে ভীত করছে না। বিজ্ঞানের বদৌলতে জমির অতিরিক্ত জল নিষ্কাশন আজ অত্যন্ত সহজ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে কৃষিক্ষেত্রে নতুন অকল্পনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছেন। উন্নতমানের বীজ উৎপাদনে বিজ্ঞান কৃষিক্ষেত্রে যে ভূমিকা রেখেছে তাও অভাবনীয়। বিশেষ করে কৃত্রিম উপায়ে উচ্চফলনশীল বীজ উৎপাদনে সাফল্য বিস্ময়কর। এসব বীজ সাধারণ বীজের তুলনায় ফসল উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে সময়ও কম নেয়। সুতরাং বীজ নিয়ে কৃষকদের অতীতের অনিশ্চয়তা দূর করেছে বিজ্ঞান। শক্তিশালী রাসায়নিক সার আবিষ্কৃত হওয়ায় ফসল উৎপাদনে এসেছে অভূতপূর্ব সাফল্য। সাম্প্রতিককালে বিশ্বের বৃষ্টিহীন শুষ্ক মরু অঞ্চলে চাষাবাদ শুরু করার প্রচেষ্টা চলছে বিজ্ঞানের সহায়তায়। সেদিন দূরে নয় যেদিন এ ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানীরা সাফল্য অর্জন করবেন।
প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ:
যতদূর ধারণা করা হয় মানুষ কৃষিকাজ শিখেছিল প্রকৃতিকে দেখে। কৃষিকাজ শেখার আগে মানুষ ছিল খাদ্য সংগ্রাহক ও যাযাবর। মনে করা হয়, যে সব ফলের বীজ মানুষ খাওয়ার পর ছুঁড়ে ফেলে দিত, মানুষ সর্বপ্রথম কৃষিকাজের ধারণা লাভ করে। এর পরবর্তীতে মানুষ শেখে হাত বা কোনো অস্ত্র জাতীয় কিছু দিয়ে মাটি খুঁড়ে বীজ প্রতিস্থাপন করে উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে নতুন গাছ নির্মাণ করতে। এই হলো মানুষের প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ। প্রাগৈতিহাসিক এই পদ্ধতিতে মানুষ বসতির আশে পাশের জমিতে কোথাও পূর্ব সংগৃহীত বীজ ছড়িয়ে, আবার কোথাও বা মাটি খুঁড়ে বীজ প্রতিস্থাপন করে কৃষিকাজ করতো। অর্থাৎ বিজ্ঞানের অর্থ যদি বুদ্ধি দ্বারা লব্ধ বিশেষ জ্ঞান হয়, তাহলে একথা মানতেই হবে যে প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজের সময় থেকেই মানুষের কৃষিকাজে সেই বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োগ ঘটেছিল।
আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ২০০ শব্দের | বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা
প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ
প্রাগৈতিহাসিক কৃষিকাজ
কৃষি ও বিজ্ঞান গবেষণা:
আধুনিক যুগে কৃষির উন্নতির প্রয়োজনে কৃষি ও বিজ্ঞানের সার্থক মিলন ঘটিয়ে কৃষিবিজ্ঞান নামক একটি সুসংহত বিষয়ের প্রচলন ঘটানো আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ থেকেই কৃষি ও বিজ্ঞানকে মিলিয়ে দিয়ে কৃষিবিজ্ঞান নামক একটি সুসংহত পাঠ্যবিষয়ের উদ্ভাবন ঘটানো হয়। এই বিষয়ের অন্তর্গত থেকে পৃথিবীর নানা বুদ্ধিদীপ্ত সম্ভাবনাময় ছাত্র-ছাত্রী কৃষির উন্নতির জন্য নানা প্রকার বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নিয়োজিত থাকেন।
কোন কোন ক্ষেত্রে এরা আধুনিক চাষী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করে থাকেন। এই বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলেই পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটেছে উচ্চ ফলনশীল নানা বীজের। এই প্রকার বীজ ব্যবহার করে অতি সহজে, স্বল্প ব্যয়ে প্রচুর পরিমাণ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।
বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া সবুজ বিপ্লব বা গ্রীন রেভোল্যুশন কৃষিক্ষেত্রে প্রধানত এই উচ্চ ফলনশীল বীজের প্রয়োগের ফলেই ঘটেছিল। তাছাড়া আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পৃথক প্রকারের ফসলের মধ্যে জিনগত মিলন ঘটিয়ে একটি নতুন প্রকারের ফসল তৈরি করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
উন্নত বিশ্বের কৃষি:
উন্নত দেশগুলোর কৃষিব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিজ্ঞাননির্ভর। জমিতে বীজ বপন থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত সমস্ত কাজেই রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোঁয়া। বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক কৃষিযন্ত্র, যেমন : মোয়ার (শস্য-ছেদনকারী যন্ত্র), রপার (ফসল কাটার যন্ত্র), বাইন্ডার (ফসল বাঁধার যন্ত্র), থ্রেশিং মেশিন (মাড়াই যন্ত্র), ম্যানিউর স্প্রেডার (সার বিস্তারণ যন্ত্র) ইত্যাদি উন্নত দেশগুলোর কৃষিক্ষেত্রে এনেছে বৈপ্লবিক সাফল্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের খামারে একদিনে ১০০ একর পর্যন্ত জমি চাষ হচ্ছে কেবল এক-একটি ট্রাক্টরের মাধ্যমে। সেগুলো আবার একসাথে তিন-চারটি ফসল কাটার যন্ত্রকে একত্রে কাজে লাগাতে সক্ষম। তারা বিভিন্নভাবে কৃষিকাজের এমন অনুকূলপরিবেশ সৃষ্টি করছে যার ফলে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তারা কৃষিকাজে ব্যাপকভাবে অগ্রগামী। যেমন বলা যায় জাপানের কথা। জাপানে জমির উর্বরাশক্তি বাংলাদেশের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ। কিন্তু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে তারা এ দেশের তুলনায় ৬ গুণ বেশি ফসল উৎপাদন করছে।
কৃষি ও বাংলাদেশ:
বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। এ দেশের মাটি ও জলবায়ু বিশ্বের অন্য দেশগুলোর তুলনায় কৃষির অনুকূলে। কিন্তু উন্নত দেশগুলো যখন প্রতিকূল অবস্থা ঘুচিয়ে ফসল উৎপাদনের বৈজ্ঞানিক নেশায় মেতেছে, সেখানে বাংলাদেশের কৃষকেরা তার কাঠের লাঙল আর একজোড়া জীর্ণ-শীর্ণ বলদ নিয়ে চেয়ে আছে আকাশের পানে বৃষ্টির প্রতীক্ষায়। তবে ধীরে ধীরে এ অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জমি চাষের জন্য প্রায় ১ লক্ষ ইঞ্জিন চালিত চাষযন্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়াও কৃষিকাজে ট্রাক্টর, সিডড্রিল (গতখনক), ধান-বুনন যন্ত্র, বিরিড্রাম সিডার, স্প্রেয়ার, উন্নত সেচ-পাম্প, ড্রায়াফ্রাম পাম্প, ট্রেডল পাম্প, রোয়ার পাম্প, শস্যকাটা যন্ত্র, ঘাসকাটা যন্ত্র, মাড়াই যন্ত্র ইত্যাদির ব্যবহার বাড়ছে। এ কথা অবশ্য সত্যি যে বাংলাদেশেও কৃষি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের গবেষণায় সফলতা এসেছে।
কৃষি শিক্ষা ব্যবহারিক চিত্র
কৃষি শিক্ষা ব্যবহারিক চিত্র
কিন্তু বাংলাদেশের শতকরা আশিভাগ কৃষক এখনও সনাতন পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করে চলেছে। শিক্ষা, সচেতনতা, মূলধন, পুঁজি ইত্যাদির অভাবে তারা কৃষিকাজে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তারা শ্রম দিচ্ছে কিন্তু উপযুক্ত ফসল পাচ্ছে না। কেননা তারা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করতে পারছে না।
কৃষিতে বিজ্ঞান ও অপপ্রয়োগ:
কৃষিকাজে বিজ্ঞানকে ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করে আধুনিক বিশ্বের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো যেমন সম্ভব হয়েছে, তেমনি অধিক ফলনের আশায় কৃষিকাজে বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ ঘটিয়ে সাময়িকভাবে লাভের জন্য বিভিন্ন সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করার মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে অহরহ।
ফলে প্রতিনিয়ত জমিতে অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে তেমন সেই কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার বৃষ্টির জলে ধুয়ে নিকটবর্তী নদী-নালায় মিশে ব্যাপক জলদূষণ ঘটাচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয় কৃষিতে সেচের প্রয়োজনে ব্যাপকভাবে অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় গভীর নলকূপ ব্যবহার করে জল তুলে ফেলার ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর বিপদজনক সীমার নিচে নেমে গিয়েছে। ফলে পানীয় জলে ক্রমশ ব্যাপক থেকে ব্যাপকতার হচ্ছে আর্সেনিকের মতন বিষের মাত্রা।
কৃষিকাজে বিজ্ঞান রচনা ২০ প্যারা
কৃষিকাজে বিজ্ঞান রচনা ২০ প্যারা
উপসংহার:
বিজ্ঞান আজ অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। উন্নত দেশগুলোতে বিজ্ঞানের সাহায্যে পাহাড় কেটে জঙ্গল পরিষ্কার করে বিভিন্নভাবে কৃষিজমি তৈরি করা হচ্ছে। ফসল আবাদের প্রতিটি পদক্ষেপে তারা বিজ্ঞানকে কাজে লাগাচ্ছে। এর ফলস্বরূপ তারা কৃষিক্ষেত্রে লাভ করছে বিরাট সাফল্য। কৃষিক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পন্থা অবলম্বনের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। সুজলা-সুফলা আমাদের এই দেশে বিজ্ঞানের জাদুর ছোঁয়া আমরা যত বেশি কাজে লাগাতে পারব ততই কৃষি আমাদের দেবে সোনালি ফসলসহ নানা ফসলের সম্ভার। কৃষকদের সচেতনতা, সরকারি ও বেসরকারিভাবে তাদের সাহায্য প্রদান এবং বাংলাদেশে কৃষি নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাই পারে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে, বাংলাদেশকে একটি সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা দেশ হিসেবে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে।