Contents
শেখ রাসেল রচনাভূমিকা: শেখ রাসেলের জন্ম: রাসেলের নামকরণ: রাসেলের ছেলেবেলা: রাসেলের সপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ড: কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধুঃ উপসংহার: আমার ভাবনায় শেখ রাসেল রচনা ভূমিকা: শেখ রাসেলের জন্ম:রাসেলের নামকরণ:রাসেলের ছেলেবেলা:নির্মম হত্যাকাণ্ড:কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু:উপসংহার:শেষ কথাঃ FAQs
প্রত্যাকটি পরিক্ষার জন্য শেখ রাসেল রচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। প্রায় প্রত্যাকবারই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এই রচনাটি এসে থাকে। এই রচনাটি নিম্নে তুলে ধরা হলো।
পাঠকগন, শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাত থেকে শেখ রাসেলকে বাঁচানো যায়নি। ১১ বছর বয়সী শেখ রাসেলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সেদিন। আজ আমরা জানবো এবং শিখবো কিভাবে আমার প্রিয় বন্ধু শেখ রাসেলকে নিয়ে একটি প্রবন্ধ লিখতে হয়। শেখ রাসেল রচনা প্রতিযোগিতার জন্য লেখা নমুনা গুলি এই প্রবন্ধ এর নিচে দেখুন।
শেখ রাসেল রচনা
১১ বছর বয়সী শেখ রাসেল সম্পর্কে আপনার অনেক কিছু জানা দরকার। এর একটি কারণ হল ১১ বছর বয়সে একটি অবুঝ শিশু তার দেশ ও পরিবারের জন্য তার জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছে। তাকে তার মায়ের পাশেই গুলি করা হয়েছিল এবং সে মারা যাওয়ার আগে তার মা কে দেখতে চেয়েছিল।
ভূমিকা:
বাঙালি জাতির ঘর থেকে যুগে যুগে আবির্ভাব হয়েছে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বের। তাদের কাউকে বা আমরা যথাযথ সম্মানের সাথে চিরকাল মনে রাখতে পেরেছি, আবার অনেকেই চলে গেছেন বিস্তৃতির অতল গহ্বরে। তবে আজ বাঙালি জাতি হিসেবে যেখানে বর্তমানে পৌঁছেছে, তার পেছনে কিছু না কিছু অবদান রেখেছেন সেই সব ব্যক্তিত্বরা।
সেই সব মহান ব্যক্তিত্ব প্রত্যেকেই বাঙালি জাতিকে দিয়ে গিয়েছেন মাথা তুলে দাঁড়ানোর রসদ, হয় তাদের জীবন দিয়ে, অথবা তাদের কর্ম দিয়ে, কেউ আবার উভয়ই দিয়ে।
বাঙালি জাতির প্রধান ব্যক্তি এবং নেতা বললেই যে মানুষটির নাম সর্বাগ্রে আসে, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে নির্মম ও করুণ হত্যার কথা আমরা সকলেই জানি।
এই স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি তার বীর পুত্র শেখ কামাল এবং শেখ জামালকে। তবে প্রায়ই আমরা যাকে ভুলে যাই, তিনি হলেন ওই একই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র, ছোট্ট সোনামনি শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সে, ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে, নির্মম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রাসেল।
তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো তার কর্মের দ্বারা বাঙালি জাতির ইতিহাসে উজ্জল অবদান রাখতেন। কারন তার সেই শিশু বয়সে তার ব্যক্তিত্বের মাধ্যমেই তার প্রকাশ করেছিলেন। তার কয়েক বৎসরের জীবন বাঙালি জাতির ইতিহাসকে এতই প্রভাবিত করেছেন, যে কখন তিনি বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ পুত্রের আসন থেকে, নেমে এসে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছেন।
শেখ রাসেলের জন্ম:
শেখ রাসেলের জন্মেছিলেন ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে। দেশ তখন ভরা হেমন্তের গন্ধে আকুল হয়ে আছে দিক দিক। গ্রাম্য সভ্যতার রীতিতে তখন আমাদের দেশের ঘরে ঘরে তখন নতুন ফসল তোলার আনন্দ।
এমনই এক আনন্দের দিনে, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে মায়ের কোল আলো করে জন্ম নেন শেখ রাসেল। রাসেলের জন্ম হয়েছিল তার বড় বোন শেখ হাসিনার ঘরে। সমগ্র বাড়ি জুড়ে বয়ে গিয়েছিল সেদিন আনন্দের জোয়ার।
রাসেলের জন্মের কিছুক্ষন পর, বড়বোন শেখ হাসিনা এসে, একটা ওড়না দিয়ে তার ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন। জন্মের সময় রাসেল ছিলেন স্বাস্থ্যবান। তার জন্ম যেন শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরই নয়, সমগ্র জাতির আনন্দ ছিল।
রাসেলের নামকরণ:
শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনেও রয়েছে একটি সুন্দর ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে এবং যুদ্ধের ঘোর বিরোধী। এজন্য তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক, বার্ট্রান্ড রাসেলের বিশেষ ভক্ত ছিলেন।
একদিকে বার্ট্রান্ড রাসেল ছিলেন যেমন নোবেলবিজয়ী দার্শনিক এবং সমাজবিজ্ঞানী, অন্যদিকে তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পুরো পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে, তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বার্টান্ড রাসেল। এমনই মহান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত ছিলো বঙ্গবন্ধুর পরিবার। এই অনুপ্রেরণা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন শেখ রাসেল।
রাসেলের ছেলেবেলা:
রাসেলের ছেলেবেলা দেশের সমকালীন উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময়। জন্মের পর খুব বেশি সময় তিনি বাবার সান্নিধ্য পাননি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে তৎকালিন পাকিস্তান সরকার। বঙ্গবন্ধুকে প্রথমে ঢাকায় রাখা হলেও পরে পাকিস্থানে স্থানান্তরিত করা হয়।
শোনা যায় বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলেন রাসেল। মাত্র দু বছর বয়সের রাসেল তার আপাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন – “তোমার বাবা কে কি আমি বাবা বলে ডাকতে পারি?”। অর্থাৎ সে কি তার আপার বাবা, অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে কি বাবা বলে ডাকতে পারে? তার মানে তার বাবা তার কাছে একেবারেই অপরিচিত মানুষের মতো ছিলেন। যখন সে ভালোভাবে চিনতে পারে। তখন সে বাবার কাছ থেকে আসতে চাইতো না। তখন তাকে বোঝানো হয়েছিল জেলই বাবার বাড়ি। সেখানে বাবা থাকেন।
সামান্য কিছুদিনের জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই রাসেল কাটিয়েছিলেন তার মা এবং বোনদের সাথে। তার পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে। ১১ বছর বয়সে যখন তার নির্মম মৃত্যু হয়, তখন তিনি সেই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।
রাসেলের সপরিবারে নির্মম হত্যাকাণ্ড:
১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাত সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা, দেশি বিদেশি বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রে, সেই রাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে ঘিরে ফেলে। একে একে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে হত্যা কারে।
সেইদিনই শেষ রাতে বঙ্গবন্ধু, এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করে হত্যাকারীরা। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত কর্মচারী মহিতুল ইসলামের বক্তব্য অনুযায়ী, রাসেল দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন, জানতে চান – সেনারা তাকেও মারবে কিনা। এমতাবস্থায় একজন সেনা কর্মকর্তা এরসে মহিতুলকে চড় মারে। রাসেল ভয় পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। সে কাঁদতে থাকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই সময় একজন ঘাতক বলে ওকে মায়ের কাছে নিয়ে যাও। তখন একজন ঘাতক রাসেলকে ভেতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।
কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধুঃ
শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু, কীভাবেই বা তিনি আমাদের বন্ধু হয়ে উঠলেন বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে রাসেলের ছেলেবেলার দিনগুলিতে। তার ছেলেবেলার দিনগুলো সম্পর্কে যেটুকু জানা যায় তার অধিকাংশই শিশু বয়সের নিষ্পাপ আত্মভোলা কর্মকাণ্ড। শোনা যায় বঙ্গবন্ধুর বাসায় টমি নামে একটি কুকুর ছিল যার সাথে ছোট্ট রাসেল খেলে বেড়াতো। একদিন খেলার সময় কুকুরটি জোরে ডেকে উঠলে ছোট রাসেলের মনে হয় টমি তাকে বকেছে। শিশু রাসেল তার আপা রেহানার কাছে এসে কাঁদতে থাকেন।
জানা যায় রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল। মাছ ধরে আবার সেই মাছ সে পুকুরেই ছেড়ে দিত। এই ছিল তার মজা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের জন্ম হলে রাসেল জয়কে নিয়ে খেলত সারাদিন। তার স্বভাব ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির। আর এই দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল একটি বাইসাইকেল। রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙে সেই বাইসাইকেলকে সঙ্গী করে রোজ স্কুলে যেত রাসেল। রাসেলের শৈশব আখ্যান যেন আমাদের সকলের শৈশবের গল্প বলে দেয়। তার শৈশবের গল্প কথাগুলির মধ্যে আমরা যেন বারবার নিজেদেরই খুঁজে পাই। পড়াশোনা, খেলাধুলা, দুরন্তপনা এসব নিয়ে রাসেল আমাদের সকলের কাছেই হয়ে ওঠে শৈশবের এক মূর্ত প্রতিমূর্তি।
রাসেলের মধ্যে খুব ছোট বেলাতেই দেখ গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর মতোই মানবিক বোধ। সব মানুষ সহ পশু পাখিদের জন্যও ছিলো তার অগাধ ভালোবাসা। সবার কাছে যেত, সবার সাথে মিশতো, বাড়িতে কাজের লোক সহ সবাইকে খুব সম্মান করতো।
উপসংহার:
শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক যুগোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব। বাঙালি জাতি তার মধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজেদের ছেলেবেলাকে। শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালির শৈশব। অন্যদিকে তার নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসের কথা। সেই সমস্ত নৃশংস ক্ষমতালোভী মানুষের কথা যারা কেবলমাত্র ক্ষমতার লোভে ১১ বছরের একটি ছোট্ট শিশুকে অবধি রেহাই দেয়নি।
যে জাতি নিজের ইতিহাস থেকে বিস্মৃত হয়, তারা সভ্যতার ইতিহাসে স্থবির হয়ে পড়ে। শেখ রাসেল বাঙালি জাতির সেই ইতিহাসের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। তার স্মৃতিকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ। শেখ রাসেলের নামে রাজধানী ঢাকার বুকে নামাঙ্কিত হয়েছে একটি স্কেটিং স্টেডিয়াম। এভাবেই চিরকাল শেখ রাসেল অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতির স্মৃতিতে। বাঙালি জাতি শেখ রাসেলের স্মৃতি বুকে নিয়ে তাকে বন্ধুর স্নেহের আসনে বসিয়ে সভ্যতার পথে আরো অগ্রসর হোক, এই কামনা করি।
আমার ভাবনায় শেখ রাসেল রচনা
আমার ভাবনায় শেখ রাসেল রচনা
বাঙালি জাতি যুগে যুগে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বকে জন্ম দিয়েছে। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় আগে বাঙালি জাতির মধ্যে আবির্ভাব ঘটেছিল এমনই এক ক্ষণজন্মা প্রতিভাবান শিশুর। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সে ‘৭৫ এর সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে তাকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু জীবনের এই স্বল্প কয়েকটি দিনে রাসেল হয়ে উঠেছেন সমগ্র বাঙালি জাতির পরম বন্ধু স্বরূপ।
ভূমিকা:
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। মাত্র ১১ বছর বয়সে, ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে, নির্মম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রাসেল। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো তার কর্মের দ্বারা বাঙালি জাতির ইতিহাসে উজ্জল অবদান রাখতেন। কারন তার সেই শিশু বয়সে তার ব্যক্তিত্বের মাধ্যমেই তার প্রকাশ করেছিলেন। তার কয়েক বৎসরের জীবন বাঙালি জাতির ইতিহাসকে এতই প্রভাবিত করেছেন, যে কখন তিনি বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ পুত্রের আসন থেকে, নেমে এসে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০০ শব্দ | মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা
শেখ রাসেলের জন্ম:
শেখ রাসেলের জন্মেছিলেন ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে। দেশ তখন ভরা হেমন্তের গন্ধে আকুল হয়ে আছে দিক দিক। গ্রাম্য সভ্যতার রীতিতে তখন আমাদের দেশের ঘরে ঘরে তখন নতুন ফসল তোলার আনন্দ। এমনই এক আনন্দের দিনে, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে মায়ের কোল আলো করে জন্ম নেন শেখ রাসেল। রাসেলের জন্ম হয়েছিল তার বড় বোন শেখ হাসিনার ঘরে। রাসেলের জন্মের কিছুক্ষন পর, বড়বোন শেখ হাসিনা এসে, একটা ওড়না দিয়ে তার ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন। জন্মের সময় রাসেল ছিলেন স্বাস্থ্যবান। তার জন্ম যেন শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরই নয়, সমগ্র জাতির আনন্দ ছিল।
রাসেলের নামকরণ:
শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনেও রয়েছে একটি সুন্দর ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে এবং যুদ্ধের বিরোধী। এজন্য তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত ছিলেন। এমন বিখ্যাত ব্যক্তির নামের সঙ্গে মিল রেখে কনিষ্ঠ পুত্রের নাম শেখ রাসেল রাখেন বঙ্গবন্ধু।
আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট সম্পর্কে রচনা | জাতীয় শোক দিবস
রাসেলের ছেলেবেলা:
রাসেলের ছেলেবেলা দেশের সমকালীন উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময়। জন্মের পর খুব বেশি সময় তিনি বাবার সান্নিধ্য পাননি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে তৎকালিন পাকিস্তান সরকার। বঙ্গবন্ধুকে প্রথমে ঢাকায় রাখা হলেও পরে পাকিস্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। তার পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে। ১১ বছর বয়সে যখন তার নির্মম মৃত্যু হয়, তখন তিনি সেই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।
নির্মম হত্যাকাণ্ড:
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাত সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে ট্যাংক দিয়ে ঘিরে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। সেইদিনই শেখ রাসেলকেও হত্যা করে হত্যাকারীরা।
আরও পড়ুনঃ বাংলা রচনাঃ ছাত্রজীবন অথবা, ছাত্র জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য
কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু:
শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু, কীভাবেই বা তিনি আমাদের বন্ধু হয়ে উঠলেন বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে রাসেলের ছেলেবেলার দিনগুলিতে। তার ছেলেবেলার দিনগুলো সম্পর্কে যেটুকু জানা যায় তার অধিকাংশই শিশু বয়সের নিষ্পাপ আত্মভোলা কর্মকাণ্ড।
শোনা যায় বঙ্গবন্ধুর বাসায় টমি নামে একটি কুকুর ছিল যার সাথে ছোট্ট রাসেল খেলে বেড়াতো। একদিন খেলার সময় কুকুরটি জোরে ডেকে উঠলে ছোট রাসেলের মনে হয় টমি তাকে বকেছে। শিশু রাসেল তার আপা রেহানার কাছে এসে কাঁদতে থাকেন। জানা যায়, রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল। মাছ ধরে আবার সেই মাছ সে পুকুরেই ছেড়ে দিত। এই ছিল তার মজা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের জন্ম হলে রাসেল জয়কে নিয়ে খেলত সারাদিন।
তার স্বভাব ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির। আর এই দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল একটি বাইসাইকেল। রাসেলের শৈশব আখ্যান যেন আমাদের সকলের শৈশবের গল্প বলে দেয়। তার শৈশবের গল্প কথাগুলির মধ্যে আমরা যেন বারবার নিজেদেরই খুঁজে পাই। পড়াশোনা, খেলাধুলা, দুরন্তপনা এসব নিয়ে রাসেল আমাদের সকলের কাছেই হয়ে ওঠে শৈশবের এক মূর্ত প্রতিমূর্তি। রাসেলের মধ্যে খুব ছোট বেলাতেই দেখ গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর মতোই মানবিক বোধ। সব মানুষ সহ পশু পাখিদের জন্যও ছিলো তার অগাধ ভালোবাসা। সবার কাছে যেত, সবার সাথে মিশতো, বাড়িতে কাজের লোক সহ সবাইকে খুব সম্মান করতো।
উপসংহার:
শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক যুগোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব। বাঙালি জাতি তার মধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজেদের ছেলেবেলাকে। শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালির শৈশব। অন্যদিকে তার নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসের কথা। তার স্মৃতিকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ। শেখ রাসেলের নামে রাজধানী ঢাকার বুকে নামাঙ্কিত হয়েছে একটি স্কেটিং স্টেডিয়াম।
শেষ কথাঃ
বন্ধুরা কেমন লাগল আমাদের আজকের আয়োজন শেখ রাসেল রচনা? এই রচনাটি অনেক কাজেই লাগতে পারে। যদি আমার ভাবনায় শেখ রাসেল রচনা টি পরিক্ষায় আসে তবে এটি লিখে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবেন। তাই দেরি না করে রচনাটি খাতায় নোট করে নিন এখনি। আমাদের ফেসবুক পেইজ এ যুক্ত থাকুন।
মানুষ আরোও যা খোজেঃ
রচনা শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু,শেখ রাসেলের দুরন্ত শৈশব,শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত,শেখ রাসেল রচনা ২০০ শব্দ,শেখ রাসেলের জীবন কাহিনী,শেখ রাসেল সম্পর্কে তথ্য,sheikh rasel rochona bangla,about sheikh rasel in bangla,শেখ রাসেলের রচনা,শেখ রাসেল রচনা ১০০ শব্দ,শেখ রাসেল রচনা ৫০০ শব্দ।
FAQs